পাঠাগার বার্তা ডেস্ক : সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় হতে দেশব্যাপী সকল জেলায় সরকারি ভাতা/অনুদানপ্রাপ্ত সংস্কৃতিসেবীদের প্রদত্ত ভাতা জিটুপি পদ্ধতিতে ‘নগদ বা বিকাশ বা ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে এবং সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের অনুদান ইএফটি’র মাধ্যমে প্রদান কার্যক্রম উদ্বোধন করা হয়েছে।
সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আজ অনলাইনভিত্তিক এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ এমপি। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ আবুল মনসুর।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী বলেন, দেশের প্রতিটি মানুষ আজ ডিজিটাল বাংলাদেশের সুফল ভোগ করছে। বিভিন্ন নাগরিক সেবার ডিজিটালাইজেশনের কারণে একদিকে যেমন স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বৃদ্ধি পেয়েছে অন্যদিকে দুর্নীতি, হয়রানি, দীর্ঘসূত্রিতা হ্রাস পেয়েছে। আর এর পেছনে নেপথ্য কারিগর হিসাবে কাজ করেছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর সুযোগ্য পুত্র আইসিটি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়।
কে এম খালিদ বলেন, যাচাই-বাছাইপূর্বক দেশব্যাপী অসচ্ছল সংস্কৃতিসেবীদের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। তারপরও কিছু ভুলত্রুটি থাকতে পারে যা সংশোধনের চেষ্টা করা হচ্ছে। সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী বলেন, অনুদানপ্রাপ্ত সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানে যাতে সঠিকভাবে সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড পরিচালিত হয়, সেজন্য সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসন ও জেলা শিল্পকলা একাডেমির মাধ্যমে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। তিনি বলেন, অসচ্ছল সংস্কৃতিসেবী এবং সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের ভাতা/অনুদান জিটুপি পদ্ধতিতে আইবাসের মাধ্যমে সরাসরি প্রেরণের মাধ্যমে সেবার মান ও গতিশীলতা অনেকগুণ বৃদ্ধি পাবে। প্রতিমন্ত্রী গতবছর ইলেকট্রনিক ফাণ্ড ট্রান্সফার (ইএফটি) এর মাধ্যমে জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র হতে বেসরকারি গ্রন্থাগারসমূহে অনুদান প্রদান প্রক্রিয়া চালু হয়েছে বলে এসময় উল্লেখ করেন।
উল্লেখ্য, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে অসচ্ছল সংস্কৃতিসেবীদেরকে ভাতা এবং সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানকে অনুদান প্রদানের নিমিত্ত ‘আর্থিকভাবে অসচ্ছল সংস্কৃতিসেবীদের ভাতা মঞ্জুরী নীতিমালা’ ও ‘সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান অনুদান মঞ্জুরী নীতিমালা’ রয়েছে। নীতিমালা মোতাবেক অসচ্ছল সংস্কৃতিসেবী এবং সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের নিকট থেকে মন্ত্রণালয়ের নির্ধারিত আবেদন ফরমে জেলা প্রশাসক এবং ঢাকা মহানগরের ক্ষেত্রে মহাপরিচালক, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মাধ্যমে আবেদন করার জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়ে থাকে। পূর্বে সংস্কৃতিসেবীদের সরকারি আদেশ (জিও) প্রক্রিয়ায় জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে ভাতা প্রদানের ব্যবস্থা করা হতো। ফলে সময়ক্ষেপণ, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা সঠিকভাবে নিশ্চিত করা সম্ভব হয়ে উঠেনি।
চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরে পুরাতন ৪০১৬ জন ও নতুন প্রায় ১০০জন সংস্কৃতিসেবীকে এবং প্রায় ১৫০০টি সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানকে জিটুপি পদ্ধতিতে আইবাসের মাধ্যমে ভাতা প্রদানের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এ লক্ষ্যে সংস্কৃতিসেবীদের জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপিসহ জাতীয় পরিচয়পত্রের বিপরীতে নিজ নামে রেজিস্ট্রিকৃত মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করা হয় এবং সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে চেক বইয়ের উপরের কভারপেজসহ ব্যাংক হিসাবের তথ্যাদি (ইংরেজি) সকল জেলা থেকে সংগ্রহ করা হয়। যেহেতু ডিজিটাল প্রক্রিয়ায় সংস্কৃতিসেবী এবং সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের নিকট ভাতা/অনুদান প্রদানের যাবতীয় কার্যক্রম সম্পন্ন করা হবে, সেহেতু স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণ এবং দ্রুততার সঙ্গে সেবাদান সম্ভবপর হবে।
আরো উল্লেখ্য, উপরোক্ত পদ্ধতিতে আজ ৩৫টি জেলার ১১২৭ জন সংস্কৃতিসেবীকে ১ কোটি ৮৩ লক্ষ ৩৭ হাজার ২০০ টাকা এবং আরো ১০টি জেলার ২০০টি সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে ৭৯ লক্ষ ৬৫ হাজার টাকা অনুদান প্রদান করা হয়েছে।
Leave a Reply