পাঠাগার বার্তা ডেস্ক : দামাইল গানের জনক বৈষ্ণব কবি রাধারমণ দত্ত পুরকায়স্থের ১০৭ তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ১৮৩৩ খ্রিস্টাব্দে সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার কেশবপুর গ্রামের জমিদার পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন তিনি।
কিশোর বয়সে পিতৃহারা হওয়ায় জগতের সৃষ্টিতত্ত্ব নিয়ে আগ্রহী হয়ে ওঠেন এবং সৃষ্টিকর্তার স্বরূপ অনুসন্ধানে মনোনিবেশ করেন রাধারমন। এক পর্যায়ে সাধক রঘুনাথ গোস্বামীর শিষ্যত্ব ও দীক্ষা গ্রহণ করেন।
তিনি শাক্ত, বৈষ্ণব, শৈব ও সহজিয়া মতবাদে লেখাপড়া করে সহজিয়া মতে সাধন-ভজন শুরু করেন। শ্রীকৃষ্ণভাবে বিভোর হয়ে রাধা-কৃষ্ণর প্রেম নিয়ে গান রচনা করেন।
৮২ বছর বয়সে ১৯১৫ সালের ১০ নভেম্বর পরলোক গমন করেন তিনি। বৈষ্ণব মতবাদের অনুসারী রাধারমনকে কেশবপুর গ্রামে সমাহিত করা হয়।
তিনি ছিলেন একাধারে গীতিকার, সুরকার ও শিল্পী। বিভিন্ন সংগ্রাহকদের মতে, রাধারমণের গানের সংখ্যা তিন হাজারেরও বেশি।
‘তোমরা কুঞ্জ সাজাও গো, আজ আমার প্রাণনাথ আসিতে পারে/কিংবা জবা কুসুম সন্ধ্যামালী আনরে তুলিয়া মনোরঙ্গে সাজাও কুঞ্জ সব সখি মিলিয়া, মুর্শিদ বলি নৌকা ছাড়ো তুফান দেখি ভয় করিও না, মুর্শিদ নামে ভাসালে তরী অকূলে ডুবিবে না/দেখলাম দেশের এই দুর্দশা, ঘরে ঘরে চোরের বাসা’ এমন গান শুনলেই বোঝা যাবে রাধারমণ দত্তের সঙ্গীত বিচিত্র বিষয়ে পরিপূর্ণ।
প্রার্থনা তো ছিলই, আত্মতত্ত্ব, দেহতত্ত্ব এবং পরমাত্মাবিষয়ক সঙ্গীত ছাড়াও তার স্বদেশ প্রেমেরও অনেক গান রয়েছে। তবে সবচেয়ে আকর্ষণীয় এবং ব্যতিক্রম হচ্ছে ধামাইল গান। রাধারমণের গানে শব্দপ্রয়োগের ক্ষেত্রে সাম্প্রদায়িকতা ছিল না। আল্লাহ-ঈশ্বরে যেমন তিনি পার্থক্য দেখেননি, গুরু এবং মুর্শিদ শব্দের পার্থক্য দেখাননি।
Leave a Reply