1. admin@pathagarbarta.com : admin :
বুধবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৪, ১২:১১ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
বাংলাদেশ পোয়েটস ক্লাবের দুইদিনব্যাপী সাহিত্য পর্যটন মিশন মহেশখালী কক্সবাজার ৮ ও ৯ নভেম্বর নবীগঞ্জে শারদ সংকলন ‘আনন্দময়ীর আগমনে’ প্রকাশিত স্বপ্নবিলাস উন্মুক্ত পাঠাগারের উদ্যোগে পাঠ প্রতিক্রিয়া প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত সৌম্যেন অধিকারীর কণ্ঠে রাণী দ্বিতীয় এলিজাবেথ স্মরণে প্রথম বাংলা গান মিডল্যান্ডস সাহিত্য ও সংস্কৃতি পরিষদ ইউকে সভায় বার্মিংহামে বিজয় দিবস পালনের সিদ্ধান্ত লেখা আহবান ইউকের বাংলা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভা অনুষ্ঠিত “রাষ্ট্র সংস্কারে পাঠাগারের ভূমিকা” শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত “রাষ্ট্র সংস্কারে পাঠাগারের ভূমিকা” শীর্ষক সেমিনার লন্ডনে আনন্দ ও উৎসবে দ্বাদশ বাংলাদেশ বইমেলা এবং সাহিত্য সাংস্কৃতিক উৎসব অনুষ্ঠিত

বিপ্লবের মহানায়ক মাস্টারদা সূর্য সেন এর আজ জন্মদিন

পাঠাগার বার্তা
  • আপডেট সময় : শুক্রবার, ২২ মার্চ, ২০২৪
  • ৮১ বার পঠিত

পাঠাগার বার্তা ডেস্ক : বিপ্লবের মহানায়ক মাস্টারদা সূর্য সেন এর আজ জন্ম বার্ষিকী। ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের অগ্রনায়ক ও অগ্নিযুগের বিপ্লবী মাস্টারদা সূর্য সেন। তৎকালীন সময়ে চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুণ্ঠনসহ বহুবিধ বিপ্লবের অগ্রনায়ক ছিলেন তিনি। বাঙালির বিপ্লবী প্রেরণার এই ধ্রুবতারার পুরো নাম সূর্যকুমার সেন। ডাকনাম ছিল কালু। সংক্ষেপে সূর্যসেন নামে তিনি অধিক পরিচিত। তবে মাষ্টার দা নামে সহযোদ্ধাদের কাছে পরিচিত ছিলেন।

আজ্ ২২ মার্চ বিপ্লবী এই কীর্তিমানের জন্মদিন। ১৮৯৪ সালের এ দিনে চট্টগ্রাম জেলার রাউজান থানার নোয়াপাড়া গ্রামে মাস্টারদা সূর্য সেন জন্মেছিলেন। তার নেতৃত্বে সশস্ত্র যুদ্ধের মাধ্যমে কয়েকদিনের জন্য চট্টগ্রাম ব্রিটিশ শাসন থেকে মুক্ত ছিল। ১৯৩৪ সালের ১২ জানুয়ারি ব্রিটিশ সরকার এ বাঙালি বিপ্লবীর ফাঁসি দিয়েছিল চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে। নিজের কর্মকীর্তির জন্য তিনি বিশ্বব্যাপী মাস্টারদা নামে সমধিক পরিচিত।

তার পিতার নাম রাজমণি সেন, মায়ের নাম শশীবালা সেন। তিনি ছিলেন পিতা-মাতার চতুর্থ সন্তান। পাঁচ বছর বয়সে পিতার মৃত্যুর পর, তার বড় কাকা গৌরমণি সেনের কাছে প্রতিপালিত হয়েছেন। পরবর্তী সময়ে জ্যাঠাতুতো দাদা চন্দ্রনাথ সেন তার অভিভাবকের দায়িত্ব পালন করেন।

তিনি প্রথমে চট্টগ্রাম কলেজে ও পরে পশ্চিমবঙ্গের বহরমপুর কৃষ্ণনাথ কলেজে ভর্তি হন। এবং এই কলেজ থেকে ১৯১৮ খ্রিষ্টাব্দে বিএ পাস করেন। এই কলেজের শিক্ষক সতীশচন্দ্র চক্রবর্তী ছিলেন যুগান্তর দলের সদস্য ছিলেন। তিনিই মূলত সূর্যসেনকে বিপ্লবী আদর্শে উদ্বুদ্ধ করেন। চট্টগ্রামে ফিরে তিনি গণিতের শিক্ষক হিসেবে ওরিয়েন্টাল স্কুলে যোগ দেন।

১৯২০ খ্রিষ্টাব্দে গান্ধীজী স্বরাজ এনে দেওয়ার জন্য বিপ্লবীদের কাছ থেকে এক বৎসরের সময় চেয়ে নেন। তৎকালীন বিপ্লবীরা অহিংস নীতিতে বিশ্বাসী না হলেও গান্ধীজীর কথায় অনেকেই সহযোগিতা করেছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এই অহিংস আন্দোলন এক বৎসরের ভিতর ভারতের স্বারজ আনতে ব্যর্থ হলে, বিপ্লবীরা আবার সশস্ত্র বিপ্লবের পথ বেছে নেন। অসহযোগ আন্দোলনের সময় স্থানীয় জনগণের সহযোগিতায় তিনি একটি জাতীয় বিদ্যালয় গড়ে তোলেন। এই বিদ্যালয়ে তিনি শিক্ষকতার কাজ শুরু করেন। এর মধ্য দিয়েই তিনি খ্যাত হন মাস্টারদা নামে। এই বিদ্যালয় পরে তাঁর বিপ্লবী কর্মকাণ্ডের গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হয়ে ওঠেছিল।

শিক্ষক হিসেবে যেমন সুনাম তেমনি দেশের মানুষের প্রতি প্রবল ভালবাসা, চরিত্রের বলিষ্ঠতায় ক্রমে আকর্ষণ করে তরুণদের। ক্লাসের ছাত্রদের বলতেন দেশের দুরাবস্থার কথা, দেশপ্রেমের কথা, স্বাধীনতার কথা। সূর্যসেন গোপনে স্বাধীনতা সংগ্রামের জমি তৈরি করছিলেন।

১৯৩০ সালের ১৮ এপ্রিল সূর্যসেনের গড়া ‘ইন্ডিয়ান রিপাবলিকান আর্মি’ চট্টগ্রামকে স্বাধীন করার লড়াই শুরু করে। বিপ্লবীরা রেললাইন উপড়ে ফেলে, টেলিগ্রাফ-টেলিফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে। একদল বিপ্লবী অক্সিলারী অস্ত্রাগার দখল করেন। সূর্যসেন ও অন্যান্য বিপ্লবীরা আক্রমণ করেন সরকারি অস্ত্রাগার। অস্ত্রাগারের রক্ষীরা কিছু বুঝে ওঠার আগেই ধরাশায়ী হল। অত্যাচারী ইংরেজরা পালাল গভীর সমুদ্রে। অধিকৃত হল সে অস্ত্রাগার। ব্রিটিশ দাম্ভিকতা, অত্যাচার-নিপীড়নের প্রতীক ‘ইউনিয়ন জ্যাক’কে বিপ্লবীরা ভূলুণ্ঠিত করে উড়িয়ে দেয় স্বাধীনতার পতাকা। ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে প্রথম স্বাধীন হলো চট্টগ্রাম।

মাস্টারদা জানতেন এ স্বাধীনতা সাময়িক। ব্রিটিশ শক্তি চারপাশ থেকে ঘিরে ধরে বিপ্লবীদের। মাস্টারদার নেতৃত্বে বিপ্লবীরা আশ্রয় নিলেন জালালাবাদ পাহাড়ে। ২২ এপ্রিল বিপ্লবীরা পরিকল্পনা করলেন শহরে ঢোকার। হঠাৎ দেখা গেল দু’দিক থেকে আসছে ইংরেজ সৈন্য। পালাবার পথ নেই। সম্মুখ লড়াই শুরু হল। শহীদ হলেন অনেক বিপ্লবী বীর। কিন্তু দেশপ্রেমে বলিয়ান বিপ্লবীদের প্রাণপণ লড়াইয়ের কাছে হার মানলো আধুনিক অস্ত্রে সাজানো প্রশিক্ষিত ইংরেজ সৈন্য। বীর শহীদদের প্রতি শেষ অভিবাদন জানিয়ে পাহাড় ত্যাগ করলেন বিপ্লবীরা।

পরবর্তী অপারেশন ইউরোপীয়ান ক্লাব। ক্লাবের বাইরে লেখা ছিল ‘dogs and natives are not allowed’ ,ভিতরে চলত মদ, নৃত্য আর বিপ্লবীদের ধরার পরিকল্পনা। মাস্টার দা’র আর এক সহযোদ্ধা প্রীতিলতার নেতৃত্বে ১৯৩২ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর ক্লাব আক্রমণ করা হয়। অপারেশন শেষে পূর্ব সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পটাশিয়াম সায়ানাইড পান করে আত্মাহুতি দেন বীরকন্যা প্রীতিলতা।

১৯৩২ হতে ১৯৩৩ সালের পুরো শীতকাল সূর্যসেন ও তাঁর সহযোদ্ধারা কঠিন সময় পার করেন। ১৯৩৩ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি গৈড়লা নামক গ্রামে আশ্রয় নেন সূর্যসেন ও বিপ্লবীরা। কিন্তু নেত্র সেন নামে এক কুলাঙ্গার অর্থের লোভে সূর্যসেনকে ধরিয়ে দেন। ধরা পড়েন আরো কয়েকজন বিপ্লবী। ১৪ আগস্ট বিশেষ ট্রাইব্যুনাল এক প্রহসনের বিচারে সূর্যসেনের মৃত্যুদণ্ড প্রদান করে।

১২ জানুয়ারি ১৯৩৪ সাল। গভীর রাতে সূর্যসেনকে ফাঁসির জন্য ডেকে তোলা হয়। তিনি উচ্চকণ্ঠে ‘বন্দে মাতরম’ স্লোগান তোলেন। ব্রিটিশ পুলিশ তাঁর উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। পিটিয়ে সূর্যসেনকে সংজ্ঞাহীন করা হয়। এরপর নিথর দেহ ফাঁসিতে ঝোলানো হয়। এতেই ক্ষান্ত হয়নি ব্রিটিশ শাসকগোষ্ঠী। তাঁর লাশ পাথরে বেঁধে জাহাজে করে চট্টগ্রাম থেকে ২০০ নটিক্যাল মাইল দূরে সাগরে নিক্ষেপ করা হয়। ব্রিটিশরা জীবিত সূর্যসেনকে যতটা ভয় পেত, তার থেকে মৃত সূর্যসেনকে বেশি ভয় পেয়েছিল।

ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের এ নায়কের নামে কলকাতা মেট্রো বাঁশদ্রোণী স্টেশনটির নামকরণ করেছে। তার সম্মানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি করে আবাসিক হলের নামকরণ করা হয়। চট্টগ্রামের জেএম সেন হলের সামনে স্থাপন করা হয়েছে আবক্ষমূর্তি। তাঁর জন্মদিনে বিনম্র শ্রদ্ধা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরও খবর

ফেসবুকে আমরা

এক ক্লিকে বিভাগের খবর

error: Content is protected !!