1. admin@pathagarbarta.com : admin :
মঙ্গলবার, ০৩ জুন ২০২৫, ১২:০২ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
বৈরী আবহাওয়া উপেক্ষা করে পাক্ষিক কমলকুঁড়ি পত্রিকার ১৫তম বর্ষে পদার্পণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত  জাতীয়ভিত্তিক গ্রন্থপাঠ কার্যক্রমের সনদপত্র ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান কবিগুরু ও নবীগঞ্জের দাশগুপ্ত জমিদার পরিবার-রত্নদীপ দাস (রাজু) কবি আজিজুল আম্বিয়ারের কাব্যগ্রন্থের মোড়ক উন্মোচম অনুষ্ঠিত  টাঙ্গাইলের ‘অভয়ারণ্য পাঠাগার’-এ বই লুট   জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র আয়োজিত ‘পাঠকের দৃষ্টিতে সেরা বই’ শীর্ষক কার্যক্রমের চূড়ান্ত মূল্যায়ন আজ সাংবাদিক সৌমিত্র দেবের মৃত্যুতে শোকের ছায়া  পুরান ঢাকার সীমান্ত গ্রন্থাগার প্রাঙ্গণে জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের আয়োজনে বৈশাখী অনুষ্ঠন আয়োজিত  জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের উদ্যোগে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ভিত্তিক গ্রন্থপাঠ কার্যক্রম বেগম রোকেয়া স্মরণে রচনা লিখন কার্যক্রমের পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠিত

স্বপ্ন দেখাচ্ছে তানিমং মারমার পাঠাগার

পাঠাগার বার্তা
  • আপডেট সময় : মঙ্গলবার, ১০ জানুয়ারি, ২০২৩
  • ১৬৩ বার পঠিত

স্বপ্ন দেখাচ্ছে তানিমং মারমার পাঠাগার

সাচিং মারমা

করোনাকে হার মানিয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তানিমং মারমার খাগড়াছড়ি জেলার গুইমারা উপজেলায় কইংগ্রী পঞ্ঞাআরং লাইব্রেরী। যেটি এখন এলাকার জন্য বাতিঘর। সেই বাতিঘরের মতো ছড়িয়ে পড়ুক লাইব্রেরী গড়ে তোলার আন্দোলন, এই প্রত্যাশা রাখছেন তানিমং মারমা।

করোনার মহামারীতে দেশের প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেলে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তানিমং মারমার প্রচেষ্টায় তার এলাকায় সকলের সহযোগিতায় গড়ে উঠেছিল কইংগ্রী পঞ্ঞাআরং লাইব্রেরী। এলাকাবাসীরা মনে করে যে, প্রতিষ্ঠানটি কইংগ্রী পঞ্ঞাআরং লাইব্রেরীঃএলাকার জন্য বাতিঘর হিসেবে কাজ করছে।

মূলত এলাকাটি গুইমারা উপজেলা সদর থেকে প্রায় ছয় কিলোমটার দূরে অবস্থান। পাহাড়ি এলাকা হওয়ায় রাস্তাঘাট তেমন উন্নত নই বললেই চলে। তবুও এলাকাটি থেকে শিক্ষার্থীদের সংখ্যা চোখে দেখার মতো। প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে উচ্চ মাধ্যমিকে পড়তে হলে সে ছয় কিলোমিটার দিনে যাওয়া আর আসা করতে হতো প্রত্যেক শিক্ষার্থীর জন্য। এইসব শিক্ষার্থীদের প্রচেষ্টা ও সহযোগিতায় ১৮ই সেপ্টেম্বর ২০২০ সালে গড়ে উঠে কইংগ্রী পঞ্ঞাআরং লাইব্রেরি ।

বর্তমানে লাইব্রেরিটিতে রয়েছে শিশুতোষ, উপন্যাস, প্রবন্ধ, ম্যাগাজিন, জীবনীসহ নানান বই মিলে প্রায় হাজার খানেক বই। তার সাথে চোখে পরার মতো পাঠকের সংখ্যা। লাইব্রেরিটিতে নিয়মিত পাঠকের সংখ্যা চল্লিশজনের অধিক রয়েছে বলে জানান তানিংমং মারমা, বর্তমানে তিনি প্রতিষ্ঠানটির সভাপতিত্ব দায়িত্ব পালন করছেন। শুধু এতেই থেমে থাকেনি প্রতিষ্ঠানটি,এলাকায় বা নানা সামাজিক কল্যাণমূলক কর্মকাণ্ডে নিজেদের নিয়োজিত করছেন এখানের পাঠকেরা।

কেন এমনটি জানতে চাইলে তানিমং মারমা বলেন, গত বছর ২০২০ সালে করোনাকালে যখন পুরো পৃথিবী থমকে গেছে, যখন সবাই গ্রামে গৃহবন্দী অবস্থায় জীবন পার করছিলাম, তখন আমার মনে হল এই শিক্ষামূলক কর্মসূচিকে অব্যাহত রাখতে গেলে স্থায়ীভাবে একটা পাঠাগার বা লাইব্রেরীর প্রয়োজন। তখন আমি এক সপ্তাহের মত এই বিষয়কে নিয়ে ভাবনায় মগ্ন ছিলাম। তার মধ্যে এটাকে কেন্দ্র করে একটা কবিতা বা ছন্দ লিখে ফেলেছিলাম। যেমন-

ভাবতে ভীষণ ভালো লাগে,
প্রতিনিয়ত আমাকে ভাবায়,
স্বপ্ন দেখতে ভীষণ ভালো লাগে,
তাই তো স্বপ্ন দেখতে পছন্দ করি।
আশেপাশে মানুষজন ভালো নেই,
আমি কেমন করে ভালো থাকি!

এরপর আমি আমার স্বপ্নগুলোকে শ্রদ্ধেয় ও বিশিষ্ট বিজ্ঞানী মংসানু মারমা বাথোয়াই স্যারকে ব্যক্ত করি। তারপরে তিনি আমাকে আশ্বাস দিলেন যে উনি উক্ত স্বপ্ন পূরণের জন্য পাশে থাকবেন। লাইব্রেরির ঘর তৈরিতে যত টিন লাগে তিনি দেবেন। এর মধ্যে প্রাইংনোহ (স্বপ্নের পাঠশালা) প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত নিংপ্রু মারমা তার সাথে আলাপ করে যথেষ্ট মানসিকভাবে শক্তি পান তিনি।

এভাবেই তার স্বপ্নকে বাস্তবে রুপান্তের গল্প বলছিলেন লাইব্রেরিটির প্রতিষ্ঠাতা তানিমং মারমা। তিনি আরো বলেন;আমরা বই পড়ার পাশাপাশি সাংস্কৃতিক, সামাজিক ও সেবামূলক কাজের সাথে শিক্ষার্থীদের সংযুক্ত করাতে চেষ্টা করি।আর এভাবেই একজন শিক্ষার্থী বেড়ে উঠলে তার বিকশিত হওয়ার সুযোগের পরিধি আরো বাড়বে বলে তিনি এবং তার সাথে পরিচালনা কমিটির সদস্যরা মনে করেন। আরো একটি লক্ষ্যণীয় বিষয় যে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনায় প্রত্যেকেই শিক্ষার্থী।২১জন কার্যকরী কমিটি ও উপদেশ মন্ডলী পাঁচ জন নিয়ে, এসো বই পড়ি,আলোকিত মানুষ গড়ি এই মূলমন্ত্র নিয়ে এগুচ্ছে লাইব্রেরিটি।

প্রতিষ্ঠানটির আয়োজনে জাতীয় দিবসসহ নানান কর্মসূচি আয়োজন করা হয় বলে তিনি জানান। তিনি বলেন এতে করে একজন শিক্ষার্থী তার দেশপ্রেম জাগ্রত করবে বলে তিনি মনে করেন। আয়োজনটিতে কুইজ প্রতিযোগিতা,রচনা প্রতিযোগিতা, চিত্রাঙ্কন, উপস্থিত বক্তৃতা, কবিতা আবৃত্তি, গল্প লেখাসহ নানা সৃজনশীলমুলক আয়োজন করা হয় বলে জানান তিনি।তারসাথে নিজস্ব মাতৃভাষা শিক্ষাও প্রদান করে থাকে প্রতিষ্ঠানটি।

তিনি বলেন লাইব্রেরীটি প্রতিষ্ঠার জন্য হাজারো মানুষের ভালবাসা ও সহযোগিতার জন্যই এই প্রতিষ্ঠান আজ এই পর্যায়ে। এই প্রতিষ্ঠানটির মাধ্যমে আরো ডানা মেলে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে সব পাঠকেরা।

তিনি জানান এলাকায় একজন শিক্ষার্থী নিজের দাঁড়িয়ে পরিচয়টুকু দিতে আগে সঙ্কোচবোধ করতো ,তবে বর্তমানে প্রত্যেকেই সাবলীলভাবে নিজেদেরকে সবার সামনে তুলে ধরছেন ,আগের সেই জড়তা আর নেই শিক্ষার্থীদের মাঝে।

তিনি বলেন প্রত্যেক গ্রামে একটি লাইব্রেরি গড়ে উঠা প্রয়োজন। এতে করে একজন শিক্ষার্থী নিজেকে আপনমনে বিকশিত করতে পারবে। প্রথম চৌধুরীর বইপড়া প্রবন্ধের বিষয় তেনে তিনি বলেন, প্রমথ চৌধুরীর বইপড়া প্রবন্ধে যে কথাটি উল্লেখ করেছেন যে,লাইব্রেরিতে যেতে কেউ বাধ্য করাবে না আর করে না। আপনি স্বেচ্ছায় সেখানে যেতে পারেন,কেউ কাউকে বাধ্য করাবে না। আমাদের লাইব্রেরিও এভাবেই ফুটে উঠছে। এখানে পাঠকেরা নিজেদের স্বেচ্ছায় আসে আর পছন্দের মতো বই সংগ্রহ করে বই পড়ছে, বইয়ের সাথে সংযোগ করে দিতে পেরে আমরা আনন্দিত।

লেখক : গুইমারা উপজেলা প্রতিনিধি, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা, পাঠাগার বার্তা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরও খবর

ফেসবুকে আমরা

এক ক্লিকে বিভাগের খবর

error: Content is protected !!